নিষিদ্ধ জাগরণ - 2

 অধ্যায় ৫: একাকি রাতের দোটানা

ডাক্তার শর্মিলা সেনের চেম্বার থেকে বেরিয়ে আসার পর থেকে মালতী দেবীর পৃথিবীটা যেন ওলটপালট হয়ে গেছে। তার মনটা এক উত্তাল সমুদ্রের মতো, যেখানে পাপ-পুণ্য, ধর্ম-অধর্ম আর বংশরক্ষার কর্তব্যের ঢেউ আছড়ে পড়ছে। তিনি মহেন্দ্রবাবুকে কিছুই বলতে পারেননি। তার সেই সাহস হয়নি। কী করে বলবেন তিনি তার স্বামীকে, তার নিজের পূত্রবধূর গর্ভে সন্তান উৎপাদন করার কথা? এই চিন্তাটা মাথায় আসতেই তার সারা শরীর লজ্জায়, ঘেন্নায় রি রি করে ওঠে।

কলকাতার এই আটতলার ফ্ল্যাটটা তার কাছে এখন এক কারাগারের মতো মনে হয়। দিনের বেলা রিয়া আর অনির্বাণের শুকনো মুখ, তাদের মেকি হাসি আর রাতের বেলার অসহনীয় নীরবতা—সবকিছু মিলে তার বুকের ওপর একটা ভারী পাথর চাপিয়ে দেয়। তিনি জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকেন, কিন্তু তার চোখ কিছুই দেখে না। তার মনের ভেতরে তখন চলে এক নিরন্তর যুদ্ধ।

এক রাতে, ঘুম ভেঙে গেল মালতী দেবীর। পাশে মহেন্দ্রবাবু গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। তার প্রশান্ত মুখের দিকে তাকিয়ে মালতী দেবীর ভেতরটা হাহাকার করে উঠল। এই মানুষটা, যিনি সারাজীবন তাকে আগলে রেখেছেন, যার ব্যক্তিত্বের ছায়ায় তিনি নিজেকে সবসময় সুরক্ষিত মনে করেছেন, তাকে তিনি এমন এক ভয়ঙ্কর প্রস্তাব দেবেন কী করে?

কিন্তু পরক্ষণেই তার চোখে ভেসে ওঠে অনির্বাণের মুখ। তার একমাত্র ছেলে। তার বংশের একমাত্র প্রদীপ। সেই প্রদীপ যদি নিভে যায়? চৌধুরী বাড়ির এত সম্পত্তি, এত সম্মান, সব কি অর্থহীন হয়ে যাবে? তার মনে পড়ে যায় গ্রামের কথা। গ্রামের মানুষ যখন জিজ্ঞেস করে, "কবে নাতির মুখ দেখাবে গো ঠাকরুন?", তখন তিনি কী উত্তর দেবেন? এই প্রশ্নগুলো তীরের মতো তার বুকে এসে বিঁধে।

তিনি বিছানা থেকে উঠে বারান্দায় এসে দাঁড়ালেন। মধ্যরাতের কলকাতা নিস্তব্ধ। দূর থেকে ভেসে আসা দু-একটা গাড়ির শব্দ সেই নিস্তব্ধতাকে আরও গভীর করে তুলছে। তিনি আকাশের দিকে তাকালেন। তারাভরা আকাশ। তার মনে হলো, ঈশ্বর যেন তার দিকে তাকিয়ে হাসছেন, তার এই দ্বিধার পরীক্ষা নিচ্ছেন।

তার মনে পড়ল রিয়ার কথা। কী সুন্দর, স্বাস্থ্যবতী মেয়েটা! লক্ষ্মী প্রতিমার মতো মুখ। এমন একটা উর্বর শরীর, যা একটা নতুন প্রাণকে ধারণ করার জন্য তৈরি। অথচ শুধু তার ছেলের অক্ষমতার জন্য সেই শরীরটা, সেই উর্বর ক্ষেত্রটা পতিত পড়ে থাকবে? এই অবিচার তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না। রিয়া কি সুখী? মালতী দেবী জানেন, সে সুখী নয়। তার চোখের গভীরে যে একরাশ অতৃপ্তি আর হাহাকার জমে আছে, তা একজন নারীর চোখ দিয়ে আরেকজন নারীই শুধু পড়তে পারে।

ডাক্তার শর্মিলার কথাগুলো তার কানে বাজতে লাগল—"আপনাদের রক্তই তো আপনাদের বংশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাইরের কোনো ডোনারের থেকে তো নিজের পরিবারের রক্ত অনেক ভালো।" কথাটা যতবার তিনি ভাবছেন, ততবার তার যুক্তিবাদী মনটা যেন বিদ্রোহী হয়ে উঠছে। হ্যাঁ, এটা অন্যায়। সমাজ এটাকে ব্যভিচার বলবে। কিন্তু সমাজের ঊর্ধ্বে তো পরিবার, বংশ। যে সমাজ তাদের এই যন্ত্রণার দিনে পাশে দাঁড়াবে না, সেই সমাজের ভয়ে তিনি তার বংশকে শেষ হয়ে যেতে দেবেন?

অনেক লড়াইয়ের পর, তার মনের ভেতর থেকে কে যেন বলে উঠল—কর্তব্যের কাছে, বংশরক্ষার ধর্মের কাছে, সামাজিক পাপ-পুণ্যের বিচার তুচ্ছ। তিনি মনকে শক্ত করলেন। তিনি মহেন্দ্রবাবুকে বলবেন। সবটা খুলে বলবেন। যদি তিনি রাজি না হন, তাহলে অন্য কথা। কিন্তু তাকে চেষ্টা করতেই হবে। চৌধুরী বংশের ভবিষ্যতের জন্য, রিয়ার অপূর্ণ নারীত্বকে সার্থক করার জন্য, আর অনির্বাণের পরাজিত মুখ থেকে ছাপ মুছে দেওয়ার জন্য, তাকে এই কঠিন পদক্ষেপটা নিতেই হবে।

অধ্যায় ৬: প্রস্তাব ও প্রত্যাখ্যান

পরের কয়েকদিন মালতী দেবী সুযোগ খুঁজছিলেন মহেন্দ্রবাবুর সাথে একা কথা বলার। কিন্তু সুযোগ হয়ে উঠছিল না। মহেন্দ্রবাবু সকালে উঠে পার্কে হাঁটতে যান, ফিরে এসে খবরের কাগজ আর নিজের গ্রামের জমির হিসাব নিয়ে বসেন। তারপর খাওয়া-দাওয়া, বিশ্রাম। বিকেলে আবার বন্ধুদের সাথে আড্ডা। তার একটা নিজস্ব জগৎ আছে, যেখানে মালতী দেবী খুব একটা প্রবেশ করেন না।

অবশেষে একদিন রাতে, খাওয়া-দাওয়ার পর যখন রিয়া আর অনির্বাণ নিজেদের ঘরে চলে গেল, মালতী দেবী তাদের শোবার ঘরে এলেন। মহেন্দ্রবাবু খাটে আধশোয়া হয়ে একটা বই পড়ছিলেন। "একটা কথা ছিল," মালতী দেবীর গলার স্বরে মহেন্দ্রবাবু বই থেকে চোখ তুললেন। "বলো।" মালতী দেবী তার পাশে বসলেন। কীভাবে শুরু করবেন, বুঝতে পারছিলেন না। তার গলা শুকিয়ে আসছিল। "ডাক্তার শর্মিলার সাথে আমার আবার কথা হয়েছে," তিনি শুরু করলেন। "কেন? তোমার শরীর কি আবার খারাপ লাগছে?" মহেন্দ্রবাবুর গলায় উদ্বেগ। "আমার শরীর নয়। আমি অনি আর বৌমার কথা বলছিলাম।"

মহেন্দ্রবাবু বইটা পাশে রেখে সোজা হয়ে বসলেন। "কী হয়েছে ওদের?" মালতী দেবী আর কোনো ভণিতা না করে, ডাক্তার শর্মিলার কাছ থেকে যা যা শুনেছেন, সবটা খুলে বললেন। অনির্বাণের শারীরিক অক্ষমতার কথা, তাদের সন্তান না হওয়ার পেছনের আসল কারণ। সব শুনে মহেন্দ্রবাবুর মুখটা গম্ভীর হয়ে গেল। তিনি জানতেন, তাদের মধ্যে কোনো একটা সমস্যা আছে, কিন্তু সমস্যাটা যে এত গভীরে, তা তিনি কল্পনাও করতে পারেননি। তার একমাত্র ছেলের এই অপূর্ণতার কথা শুনে তার বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল।

"তাহলে উপায়?" তিনি স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন। মালতী দেবী এবার তার আসল কথাটা বলার জন্য প্রস্তুত হলেন। তার বুকের ভেতরটা কাঁপছিল। তিনি কাঁপা কাঁপা গলায় ডাক্তার শর্মিলার সেই "অস্বাভাবিক" প্রস্তাবের কথা বললেন।

কথাটা শোনার সাথে সাথে মহেন্দ্রবাবু যেন আগ্নেয়গিরির মতো ফেটে পড়লেন। "তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে মালতী! তুমি এটা ভাবতেও পারলে? তোমার মুখে এসব কথা বলতে লজ্জা করল না?" তিনি বিছানা থেকে নেমে দাঁড়ালেন। তার সারা শরীর রাগে কাঁপছিল। "রিয়া আমার বৌমা! আমার মেয়ের মতো। আর তুমি আমাকে তার সাথে... ছি! ছি! এর থেকে বড় পাপ আর কিছু হতে পারে না। আমি এই পাপ করতে পারব না।" "পাপ?" এবার মালতী দেবীও রুখে দাঁড়ালেন। "বংশ রক্ষা করাটা কি পাপ? আমাদের চৌধুরী বংশ কি এখানেই শেষ হয়ে যাবে? আমাদের এত বড় সম্পত্তি, এত সম্মান, কে দেখবে? অনির পর এই চৌধুরী বংশের নাম নেওয়ার মতো আর কেউ থাকবে না? তুমি কি এটাই চাও?" মালতী দেবী কান্নায় ভেঙে পড়লেন।

"তার জন্য আমি একজন ডোনারের ব্যবস্থা করতে পারি। কিন্তু আমি নিজে এই নোংরামির মধ্যে জড়াতে পারব না," মহেন্দ্রবাবু ঘরের মধ্যে পায়চারি করতে করতে বললেন। "বাইরের লোকের রক্ত তুমি আমাদের বংশে আনবে? কে সে, কী তার পরিচয়, কী তার রক্ত—কিছুই জানবে না। তার চেয়ে তোমার নিজের রক্ত... আমাদের চৌধুরী বংশের রক্ত... সেটা কি ভালো নয়?"

মহেন্দ্রবাবু কোনো উত্তর দিতে পারলেন না। তার রাগটা ধীরে ধীরে কমে আসছিল। তার মনেও এই একই দ্বন্দ্ব শুরু হলো। তিনি খাটে বসে পড়লেন। তার কপালে গভীর চিন্তার ভাঁজ। মালতী দেবীর কথাগুলো একেবারে অযৌক্তিক নয়। কিন্তু তার বিবেক, তার নৈতিকতা তাকে এই চরম পথে যেতে বাধা দিচ্ছিল। "আমাকে ভাবতে দাও," তিনি ক্লান্ত গলায় বললেন। "এখন তুমি যাও, আমাকে একা থাকতে দাও।" মালতী দেবী ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। তিনি জানেন, তিনি তার স্বামীর মনের মধ্যে সন্দেহের বীজ পুঁতে দিয়েছেন। এখন শুধু অপেক্ষা করার পালা।

অধ্যায় ৭: নিষিদ্ধ আকর্ষণের পুনঃপ্রকাশ

মহেন্দ্রবাবুর মনের শান্তি চলে গেল। স্ত্রীর বলা কথাগুলো তার মাথায় ঘুরপাক খেতে লাগল। তিনি রিয়াকে এড়িয়ে চলতে শুরু করলেন। কিন্তু একই ছাদের নিচে থেকে আর কতক্ষণ এড়িয়ে চলা যায়? আর ভাগ্যও যেন তাদের বারবার মুখোমুখি এনে ফেলছিল। সেই অনাকাঙ্ক্ষিত মুহূর্তগুলো আরও তীব্র, আরও ঘন ঘন ঘটতে লাগল, যা মহেন্দ্রবাবুর মনের ভেতরের প্রতিরোধকে ধীরে ধীরে ভেঙে দিচ্ছিল।

চতুর্থ ঘটনা: যোগাসনের মোহ

একদিন সকালে, মহেন্দ্রবাবু পার্ক থেকে হেঁটে ফিরেছেন। ঘামে ভেজা শরীর নিয়ে তিনি নিজের ঘরের দিকে যাচ্ছিলেন। ড্রইংরুম পার হওয়ার সময় তিনি থমকে দাঁড়ালেন। ঘরের মাঝখানে, নরম কার্পেটের ওপর একটা ইয়োগা ম্যাট পাতা। আর তার ওপর রিয়া যোগাসন করছে। তার পরনে শরীরের সাথে লেপ্টে থাকা কালো রঙের টাইটস আর একটা হালকা সবুজ স্পোর্টস ব্রা।

রিয়া তখন 'ধনুরাসন' করছিল। তার শরীরটা ধনুকের মতো বেঁকে গেছে। তার টানটান পেট, সরু কোমর, এবং তার ভারী, গোলাকার নিতম্ব টাইটসের নিচে সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। মহেন্দ্রবাবুর চোখ দুটো সেখানে আটকে গেল। তিনি দ্রুত চোখ ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেন, কিন্তু পারলেন না। রিয়ার শরীরের প্রতিটি ভাঁজ, প্রতিটি বক্ররেখা যেন এক নিখুঁত শিল্পকর্ম। তার মসৃণ পিঠের ওপর দিয়ে কয়েক ফোঁটা ঘাম গড়িয়ে পড়ছে, যা সকালের নরম আলোয় মুক্তোর মতো চকচক করছে।



এরপর রিয়া 'ভুজঙ্গাসন' শুরু করল। সাপের মতো ফণা তোলার ভঙ্গিতে সে যখন শরীরটা তুলল, তখন তার স্পোর্টস ব্রা-র নিচে তার সুডৌল, ভরাট বুকের একাংশ উন্মুক্ত হয়ে পড়ল। মহেন্দ্রবাবুর নিঃশ্বাস ভারি হয়ে এল। এই সাতাশ বছরের যুবতীর শরীরে কী অসম্ভব জীবনীশক্তি, কী অদম্য আকর্ষণ! তার মনে হলো, এমন একটা শরীর সৃষ্টির জন্যই তৈরি। আর এই শরীরটাকেই তার ছেলে... তার নিজের ছেলে... মহেন্দ্রবাবুর ভেতরটা এক গভীর হতাশায় ভরে গেল।

রিয়া চোখ বন্ধ করে থাকায় তার শ্বশুরের উপস্থিতি টের পায়নি। কিন্তু মহেন্দ্রবাবু আর সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারলেন না। তিনি নিঃশব্দে নিজের ঘরে চলে গেলেন। কিন্তু রিয়ার সেই যোগাসনের দৃশ্যটা তার চোখের সামনে ভাসতে লাগল। তার শরীরের প্রতিটি রেখা, তার ঘামে ভেজা ত্বক, তার যৌবনের উদ্দাম প্রকাশ—সবকিছু মিলে তার মনের ভেতরের ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরিটাকে জাগিয়ে তুলছিল।

পঞ্চম ঘটনা: স্নানের ঘরের বাষ্প

মালতী দেবীর শরীরটা দুর্বল থাকায় তাকে বাথরুমে যেতে সাহায্য করতে হয়। একদিন বিকেলে, রিয়া তাকে স্নান করাতে নিয়ে গিয়েছিল। গরম জলের বাষ্পে বাথরুমটা ভরে গেছে। মহেন্দ্রবাবু নিজের ঘর থেকে বেরিয়েছেন একটা জরুরি ফাইল খুঁজতে, যা তিনি আগের দিন ড্রইংরুমের টেবিলে রেখেছিলেন।

বাথরুমের দরজাটা সামান্য ভেজানো ছিল। ফাইলটা খুঁজতে খুঁজতে তিনি বাথরুমের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ ভেতর থেকে রিয়ার গলার আওয়াজ পেলেন, "মা, আমি আপনার পিঠে সাবান মাখিয়ে দিচ্ছি।" কৌতূহলী হয়ে, বা হয়তো অবচেতন মনের কোনো এক টানে, মহেন্দ্রবাবু দরজার ফাঁক দিয়ে ভেতরে উঁকি মারলেন। যা দেখলেন, তাতে তার রক্ত চলাচল দ্রুত হয়ে গেল।

মালতী দেবী একটা প্লাস্টিকের টুলে বসে আছেন। আর তার সামনে দাঁড়িয়ে রিয়া। স্নান করানোর সুবিধার্থে রিয়া তার শাড়ির আঁচলটা কোমরে গুঁজে নিয়েছে। তার পিঠটা সম্পূর্ণ অনাবৃত। গরম জলের বাষোপা আর সাবানের ফেনা তার ফর্সা, মসৃণ পিঠের ওপর দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে। সে যখন ঝুঁকে পড়ে তার শাশুড়ির পিঠে সাবান মাখাচ্ছে, তখন তার ব্লাউজের পাশ দিয়ে তার ডান দিকের বুকের অনেকটা অংশ দেখা যাচ্ছে। ভেজা কাপড়ের নিচে তার বুকের আকার, তার গোলাপি আভা—সবকিছুই স্পষ্ট।

মহেন্দ্রবাবু mesmerized হয়ে গেলেন। তিনি যেন সম্মোহিত। তিনি দেখতে পাচ্ছিলেন, রিয়ার প্রতিটি নড়াচড়ায় তার শরীরের পেশীগুলো কীভাবে খেলছে। তার মধ্যে কোনো মেদ নেই, আছে শুধু নিখুঁত নারীত্বের এক জীবন্ত প্রকাশ। তিনি দ্রুত নিজেকে সামলে নিলেন। ছি ছি! তিনি কী করছেন! নিজের বৌমার দিকে এমনভাবে তাকানো! তিনি দ্রুত সেখান থেকে সরে গেলেন। কিন্তু তার চোখের সামনে রিয়ার সেই ভেজা, সাবান-মাখা শরীরটা ভাসতে লাগল। তার মনে হলো, তার ষাট বছরের জীবনে তিনি এমন নিখুঁত, এমন লাস্যময়ী শরীর আর দেখেননি। তার এতদিনের সংযম, তার নৈতিকতার বাঁধ যেন ধীরে ধীরে ভেঙে পড়তে শুরু করেছে। তিনি অনুভব করছেন, তিনি আর নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। এই নিষিদ্ধ ফলের স্বাদ নেওয়ার জন্য তার মনটা ব্যাকুল হয়ে উঠছে। বংশরক্ষার অজুহাতটা এখন তার কাছে তার নিজের ভেতরের আকাঙ্ক্ষাকে পূরণ করার একটা মাধ্যম বলে মনে হচ্ছে।

অধ্যায় ৮: অন্ধকার ও স্পর্শ

কলকাতার গ্রীষ্মের রাত। ভ্যাপসা গরম আর ইলেক্ট্রিসিটির লুকোচুরি খেলা যেন এই শহরের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সেদিন রাতেও তার ব্যতিক্রম হলো না। রাত তখন প্রায় এগারোটা। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে যে যার ঘরে। অনির্বাণ তার ল্যাপটপে অফিসের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। রিয়া বিছানায় শুয়ে একটা পত্রিকা পড়ছিল, কিন্তু তার মন ছিল বিক্ষিপ্ত। শ্বশুরের সেই সম্মোহিত দৃষ্টি, তার বলিষ্ঠ শরীরের উষ্ণ স্পর্শের স্মৃতি তাকে বারবার অন্যমনস্ক করে দিচ্ছিল।

হঠাৎ করেই সব নিস্তব্ধ হয়ে গেল। ফ্যান বন্ধ, এসি-র শব্দ নেই, ঘরের আবছা আলোটাও নিভে গেল। লোডশেডিং। এই অপ্রত্যাশিত অন্ধকারে রিয়ার বুকের ভেতরটা ধুক করে উঠল। সে অন্ধকারকে ভয় পায়। ছোটবেলা থেকেই এই ভয়টা তার সঙ্গী। "অনির্বাণ," সে নিচু গলায় ডাকল। "উফফ, ঠিক সময়ে কারেন্টটা যাওয়ার ছিল!" ল্যাপটপের স্ক্রিনের আলোয় অনির্বাণের বিরক্ত মুখটা দেখা যাচ্ছে। "ইনভার্টারটাও আজ সকাল থেকে ডিস্টার্ব করছে। দেখো তো ড্রয়ারে মোমবাতি আছে কিনা।"

রিয়া হাতড়ে হাতড়ে বিছানা থেকে নামল। ড্রয়ার খুলে একটা মোমবাতি আর দেশলাই খুঁজে পেল। মোমবাতির কাঁপা কাঁপা আলোয় ঘরটা কেমন যেন রহস্যময় হয়ে উঠল। "আমি আসছি," বলে অনির্বাণ ল্যাপটপ নিয়েই বারান্দার দিকে চলে গেল, হয়তো ফোনে অফিসের কারো সাথে কথা বলতে।

রিয়া একা ঘরে বসে রইল। তার অস্বস্তি লাগছিল। সে ভাবল, একবার শাশুড়ির ঘর থেকে ঘুরে আসবে। তিনি হয়তো ভয় পাচ্ছেন। ধীর পায়ে, মোমবাতি হাতে সে করিডোরে বেরিয়ে এল। করিডোরটা লম্বা আর অন্ধকার। মোমবাতির আলোয় দেয়ালের ছায়াগুলো জীবন্ত হয়ে উঠেছে, যেন কোনো প্রাচীন গুহার ভেতরের দেওয়ালচিত্র।

সে তার শ্বশুর-শাশুড়ির ঘরের দরজার সামনে এসে দাঁড়াল। ভেতরটা নিঃশব্দ। হয়তো তারা ঘুমিয়ে পড়েছেন। সে ফিরে যাওয়ার জন্য ঘুরতেই, উল্টোদিক থেকে আসা একটা বলিষ্ঠ শরীরের সাথে তার সজোরে ধাক্কা লাগল।

"আহ!" রিয়ার হাত থেকে মোমবাতিটা ছিটকে পড়ে নিভে গেল। করিডোরটা আবার অন্ধকারে ডুবে গেল। রিয়া ভয় পেয়ে চিৎকার করতে গিয়েও পারল না। কারণ একজোড়া শক্তিশালী হাত ততক্ষণে তার দুটো বাহু শক্ত করে ধরে ফেলেছে, তাকে পড়ে যাওয়া থেকে বাঁচানোর জন্য। "কে?" কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করল সে। "আমি। ভয় পেও না বৌমা," মহেন্দ্রবাবুর সেই পরিচিত, গভীর গলার স্বর রিয়ার কানে ভেসে এল।

অন্ধকারে তারা দুজন একে অপরের খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে। রিয়ার শরীরটা মহেন্দ্রবাবুর পাথরের মতো কঠিন বুকের সাথে প্রায় লেপ্টে আছে। তার বাহুতে শ্বশুরের হাতের দৃঢ় অথচ সংযত স্পর্শ। মহেন্দ্রবাবুর নিঃশ্বাসের উষ্ণ বাতাস রিয়ার মুখে এসে পড়ছে। তার শরীর থেকে আসা সেই তীব্র পুরুষালি গন্ধটা এই বদ্ধ, অন্ধকার করিডোরে আরও তীব্রভাবে রিয়ার সমস্ত ইন্দ্রিয়কে আচ্ছন্ন করে ফেলছে।

রিয়ার সারা শরীর দিয়ে এক অদ্ভুত শিহরণ বয়ে গেল। এটা ভয় নয়, এটা এক অজানা, নিষিদ্ধ উত্তেজনা। এই প্রথম সে তার শ্বশুরের শরীরের এত কাছাকাছি। এই স্পর্শে কোনো লালসা নেই, আছে শুধু তাকে পড়ে যাওয়া থেকে বাঁচানোর আকস্মিক প্রতিক্রিয়া। কিন্তু এই নৈকট্য, এই অন্ধকার, আর এই স্পর্শ—সবকিছু মিলে এক ভয়ঙ্কর আকর্ষণ তৈরি করছিল। "আপনি ঠিক আছেন তো বাবা?" রিয়া ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করল। "হ্যাঁ। তুমি?" মহেন্দ্রবাবুর গলাটাও কেমন যেন ধরে আসছিল। তিনিও অনুভব করছিলেন তার বৌমার নরম, উষ্ণ শরীরের উপস্থিতি। রিয়ার বুকের কোমলতা তার কঠিন বুকে চেপে বসেছে। এই অনুভূতি তার ষাট বছরের জীবনে এক নতুন ঝড় তুলেছে।

"আমি... আমি ঠিক আছি," রিয়া নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করল, কিন্তু পারল না। মহেন্দ্রবাবুর হাত দুটো তখনও তার বাহু ধরে আছে। কয়েক মুহূর্ত তারা সেভাবেই দাঁড়িয়ে রইল। নিঃশব্দ, গতিহীন। শুধু দুজনের ভারি নিঃশ্বাসের শব্দ সেই অন্ধকার করিডোরের নিস্তব্ধতা ভাঙছিল। রিয়ার মনে হচ্ছিল, এই মুহূর্তটা যেন অনন্তকাল ধরে চলুক।

হঠাৎ করেই পাওয়ার ফিরে এল। করিডোরের আলো জ্বলে উঠতেই তারা দুজনেই যেন সম্বিৎ ফিরে পেল। মহেন্দ্রবাবু দ্রুত রিয়াকে ছেড়ে দিয়ে দু-পা পিছিয়ে গেলেন। রিয়ার মুখ লজ্জায় লাল। মহেন্দ্রবাবুর চোখেও এক গভীর অস্বস্তি। "আমি... আমি মা-র জন্য চিন্তা করছিলাম," রিয়া কোনোমতে বলল। "ও ঘুমোচ্ছে। আমি একটু জল খেতে বেরিয়েছিলাম," মহেন্দ্রবাবুও স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করলেন। দুজনেই আর কোনো কথা না বলে দ্রুত নিজেদের ঘরের দিকে চলে গেল।

ঘরে ফিরে মহেন্দ্রবাবু দরজা বন্ধ করে দিলেন। তার হৃদপিণ্ড দ্রুতগতিতে চলছিল। রিয়ার শরীরের সেই নরম স্পর্শ, তার ঘ্রাণ, তার উষ্ণ নিঃশ্বাস—সবকিছু তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। তিনি আর নিজেকে বোঝাতে পারছিলেন না। তার এতদিনের সংযমের বাঁধ, তার নৈতিকতার দেয়াল—সবকিছু যেন এই নিষিদ্ধ আকর্ষণের বন্যায় ভেসে যেতে চাইছে। তিনি বুঝতে পারছিলেন, তিনি আর প্রতিরোধ করতে পারবেন না।

অধ্যায় ৯: জমিদারের সিদ্ধান্ত

সেই রাতের পর মহেন্দ্র চৌধুরীর ভেতরের জগৎটা সম্পূর্ণ বদলে গেল। তার এতদিনের বিশ্বাস, তার নৈতিকতার ধারণা, সবকিছুই যেন এক নতুন প্রশ্নের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। তিনি সারারাত ঘুমাতে পারলেন না। তার চোখের সামনে বারবার ভেসে উঠছিল রিয়ার সেই ভয় পাওয়া, লজ্জারক্তিম মুখ, তার নরম শরীরের উষ্ণ স্পর্শ। তিনি অনুভব করছিলেন, এটা শুধু বংশরক্ষার প্রশ্ন নয়, এটা তার নিজেরও এক গভীর, অবদমিত আকাঙ্ক্ষার প্রশ্ন।

সকালে উঠে তিনি আয়নার সামনে দাঁড়ালেন। নিজের প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে তিনি নিজেকেই চিনতে পারছিলেন না। এই কি সেই মহেন্দ্র চৌধুরী, যার নামে গ্রামের মানুষ কাঁপে, যার সিদ্ধান্তই শেষ কথা? আজ সে তার নিজের কামনার কাছে, নিজের বৌমার আকর্ষণের কাছে এমনভাবে হেরে যাচ্ছে?

তিনি মনকে শক্ত করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু যখনই তিনি চোখ বন্ধ করেন, তখনই রিয়ার সেই যোগাসনের দৃশ্য, তার স্নানের ঘরের বাষ্পমাখা শরীর, আর গত রাতের অন্ধকারের সেই ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত তার চোখের সামনে ভেসে ওঠে। তিনি বুঝতে পারছিলেন, তার ষাট বছরের শরীরটা হয়তো বুড়ো হয়েছে, কিন্তু তার ভেতরের পুরুষ সত্তাটা এখনও তরতাজা, এখনও ক্ষুধার্ত।

সকালের খাবার টেবিলে পরিবেশটা আরও থমথমে। রিয়া তাকে এড়িয়ে চলছিল। সে একবারও তার শ্বশুরের দিকে তাকাচ্ছিল না। কিন্তু মহেন্দ্রবাবু লক্ষ্য করলেন, রিয়ার গালে এখনও সেই লজ্জার আভা লেগে আছে। তার এই লজ্জা, এই অস্বস্তি, মহেন্দ্রবাবুর আকাঙ্ক্ষাকে আরও তীব্র করে তুলল।

খাওয়ার পর তিনি মালতী দেবীকে তাদের ঘরে ডাকলেন। "মালতী, তুমি সেদিন যে প্রস্তাবের কথা বলেছিলে, আমি সেটা নিয়ে ভেবেছি," শান্ত কিন্তু দৃঢ় গলায় বললেন তিনি। মালতী দেবী অবাক হয়ে তার স্বামীর দিকে তাকালেন। "আমি রাজি," মহেন্দ্রবাবু বললেন। "কিন্তু তার আগে অনির্বাণ আর বৌমার সম্মতি দরকার। আমি চাই না, এই ব্যাপারে তাদের ওপর কোনো জোর করা হোক। তারা যদি স্বেচ্ছায় রাজি হয়, তাহলেই আমি এই চরম পদক্ষেপ নেব। এটা কোনো পাপ নয়, এটা আমাদের বংশের জন্য, আমাদের ভবিষ্যতের জন্য এক 'যজ্ঞ'। আর এই যজ্ঞে সকলের পূর্ণ সম্মতি থাকা প্রয়োজন।"

মালতী দেবীর মুখে একরাশ বিস্ময় আর আনন্দ খেলা করে গেল। তিনি জানতেন, তার স্বামী বাইরে থেকে যতই কঠোর হোন না কেন, ভেতরে তিনি পরিবারের ভালোর জন্যই সবকিছু করতে পারেন। "আমি আজই ওদের সাথে কথা বলব," আত্মবিশ্বাসের সাথে বললেন মালতী দেবী। "ওরা রাজি হবে। আমি জানি, ওরাও यही চায়।"

অধ্যায় ১০: যজ্ঞের প্রস্তাব

সেই রবিবার বিকেলে, মালতী দেবী অনির্বাণ আর রিয়াকে তাদের শোবার ঘরে ডাকলেন। ঘরের দরজাটা বন্ধ করে দিলেন তিনি। বাইরের মেঘলা আকাশটার মতোই ঘরের ভেতরটাও কেমন যেন থমথমে,। অনির্বাণ আর রিয়া সোফায় বসেছিল, দুজনের মধ্যে কয়েক ইঞ্চির দূরত্ব, কিন্তু মনের দূরত্বটা যেন কয়েক আলোকবর্ষের। "তোমাদের একটা জরুরি কথা বলার ছিল," মালতী দেবী শুরু করলেন। তার গলার স্বরটা শান্ত, কিন্তু তার মধ্যে একটা দৃঢ়তা ছিল।

তিনি কোনো ভণিতা করলেন না। সরাসরি আসল কথায় এলেন। তিনি অনির্বাণের শারীরিক অক্ষমতার কথা, তাদের সন্তানহীনতার যন্ত্রণা, এবং চৌধুরী বংশের ভবিষ্যতের কথা—সবকিছু আবার মনে করিয়ে দিলেন। "আমি জানি, তোরা অনেক চেষ্টা করেছিস। কিন্তু যা স্বাভাবিকভাবে সম্ভব নয়, তার জন্য অন্য পথ ভাবতে হয়।" "কী পথ মা?" অনির্বাণ হতাশ, পরাজিত গলায় জিজ্ঞেস করল।

মালতী দেবী এক মুহূর্ত থামলেন। তারপর রিয়া আর অনির্বাণের চোখের দিকে সরাসরি তাকিয়ে বললেন, "তোমাদের বাবা রাজি হয়েছেন।" রিয়া আর অনির্বাণ বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেল। কী বলতে চাইছেন তিনি? "তোমাদের বাবা, আমাদের এই বংশের হাল ধরবেন। তিনি... তিনি বৌমার গর্ভে আমাদের উত্তরাধিকারীকে আনবেন।"

কথাটা শোনার সাথে সাথে অনির্বাণের ফর্সা মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে গেল। তার কানের পাশে রগগুলো দপদপ করতে লাগল। তার নিজের বাবা... তার স্ত্রীর সাথে... এই চিন্তাটা তার পুরুষত্বে, তার অস্তিত্বে এক চরম আঘাত হানল। সে মাথা নিচু করে রইল, তার দুটো হাত শক্ত করে মুঠো করা। রিয়া পাথরের মতো বসে রইল। তার মাথা কাজ করছিল না। তার শ্বাশুড়ির মুখ থেকে এমন একটা কথা শোনার জন্য সে প্রস্তুত ছিল না। তার নিজের শ্বশুরমশাই... যার প্রতি তার মনে শ্রদ্ধা আর এক নিষিদ্ধ আকর্ষণ দুটোই কাজ করছিল, সেই মানুষটা... এই প্রস্তাবটা একই সাথে ভয়ঙ্কর এবং ভয়ানকভাবে উত্তেজনাপূর্ণ। তার শরীরটা কাঁপছিল।

"মা! তুমি এটা কী বলছ? এটা পাপ! সমাজ কী বলবে?" অনির্বাণ বহু কষ্টে গলা দিয়ে স্বর বের করল। "সমাজের কথা আমি ভাবছি না। আমি আমার বংশের কথা ভাবছি। এই বিশাল সম্পত্তির কথা ভাবছি। এর জন্য একজন উত্তরাধিকারী দরকার। আর এই কথাটা এই ঘরের চার দেয়ালের মধ্যেই থাকবে। বাইরের কেউ কিচ্ছু জানবে না। এটা কোনো শারীরিক মিলন নয়, এটা একটা যজ্ঞ। আমাদের বংশকে রক্ষা করার যজ্ঞ।"

মালতী দেবী রিয়ার পাশে এসে বসলেন। তার মাথায় হাত রেখে বললেন, "আমি জানি বৌমা, তোর জন্য এটা খুব কঠিন। কিন্তু তুই-ই পারিস আমাদের এই বংশকে রক্ষা করতে। তুই কি রাজি নোস মা?" রিয়া অনির্বাণের দিকে তাকাল। অনির্বাণের নতজানু, পরাজিত মুখের দিকে তাকিয়ে তার ভেতরটা কেঁদে উঠল। সে বুঝতে পারছিল, অনির্বাণও মনে মনে এটাই চায়। সে তার এই অক্ষমতার বোঝা আর বইতে পারছে না। সেও চায়, এই শূন্য বাড়িটা একটা শিশুর হাসিতে ভরে উঠুক, সেই শিশুর জন্মদাতা সে না হোক।

রিয়া চোখ বন্ধ করল। তার চোখের সামনে ভেসে উঠল মহেন্দ্রবাবুর সেই বলিষ্ঠ, পৌরুষদীপ্ত চেহারা। তার স্পর্শের সেই উষ্ণ স্মৃতি। সে জানে, সে যা করতে চলেছে, তা সামাজিক দৃষ্টিতে অন্যায়। কিন্তু তার নারী মন, তার অতৃপ্ত শরীর, আর তার মাতৃত্বের আকাঙ্ক্ষা—সবকিছু মিলে তাকে এই চরম সিদ্ধান্তের দিকে ঠেলে দিল। সে ধীরে ধীরে চোখ খুলল। তার চোখে জল, কিন্তু তার দৃষ্টি দৃঢ়। সে নিচু গলায় শুধু বলল, "আপনারা যা ভালো বুঝবেন, তাই হবে। আমি প্রস্তুত।"

অধ্যায় ১১: প্রথম রাত্রি - পর্ব ১ (নিস্তব্ধ অভিসার)

রাতটা যেন আজ আরও গভীর, আরও নিস্তব্ধ। বালিগঞ্জের এই অভিজাত পাড়াও যেন ঘুমিয়ে পড়েছে। শুধু চৌধুরী পরিবারের আটতলার ফ্ল্যাটে জেগে আছে তিনটি প্রাণী। অনির্বাণ ঘুমের ওষুধের ঘোরে বিছানায় পড়ে আছে। মালতী দেবী তার ঘরে বসে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছেন। আর রিয়া, তার নিজের শোবার ঘরে, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখছে।

তার পরনে একটা হালকা নীল রঙের সিল্কের শাড়ি। চুলগুলো খোলা, পিঠের ওপর ছড়িয়ে আছে। চোখে একরাশ ভয়, লজ্জা, আর এক অজানা কৌতূহল। সে কি ঠিক করছে? এই প্রশ্নটা তার মাথায় বারবার ঘুরপাক খাচ্ছে। কিন্তু এখন আর ফিরে যাওয়ার উপায় নেই। সে কথা দিয়েছে।

তার হৃদপিণ্ডটা এত জোরে চলছে যে তার শব্দ সে নিজেই শুনতে পাচ্ছে। সে আয়নায় নিজের প্রতিবিম্বের দিকে তাকাল। এ কোন রিয়া? এ কি সেই সাধারণ, ঘরোয়া মেয়ে, যে তার স্বামীকে ভালোবাসত, একটা ছোট্ট সংসারের স্বপ্ন দেখত? নাকি এ এক নতুন রিয়া, যে তার অতৃপ্ত আকাঙ্ক্ষাকে পূরণ করার জন্য, তার বংশের জন্য, এক নিষিদ্ধ পথে পা বাড়াতে চলেছে?

রাত বারোটার কাঁটা পার হলো। রিয়া গভীর নিঃশ্বাস নিল। এবার যাওয়ার সময় হয়েছে। সে ধীর পায়ে, নিঃশব্দে ঘর থেকে বেরিয়ে এল। করিডোরটা আবছা অন্ধকারে ঢাকা। তার প্রতিটা পদক্ষেপ যেন এক যুগ ধরে পড়ছে। শ্বশুরের ঘরের দরজার সামনে এসে সে এক মুহূর্তের জন্য দাঁড়াল। তার পা দুটো যেন আর এগোতে চাইছে না।

দরজাটা সামান্য ভেজানো। সে কাঁপা হাতে দরজাটা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করল।

ঘরের ভেতরে একটা নীল রঙের নাইট ল্যাম্প জ্বলছে। সেই আবছা আলোয় সে দেখল, মহেন্দ্রবাবু খাটে বসে আছেন। তার পরনে শুধু একটা সাদা লুঙ্গি। তার উন্মুক্ত বলিষ্ঠ বুক, চওড়া কাঁধ—সেই দৃশ্যটা রিয়ার বুকের ভেতরের কাঁপুনিটাকে আরও বাড়িয়ে দিল।

মহেন্দ্রবাবু তার দিকে তাকালেন। তার চোখে ছিল এক গভীর, শান্ত দৃষ্টি। সেই দৃষ্টিতে কোনো তাড়া নেই, কোনো লালসা নেই। আছে শুধু এক দীর্ঘ প্রতীক্ষা। "এসো," তার গলার স্বরটা যেন ঘরের নিস্তব্ধতাকে চিরে দিল।

রিয়া ধীর পায়ে এগিয়ে গেল। তার শরীরটা যেন তার নিজের নিয়ন্ত্রণে নেই। সে এক মন্ত্রমুগ্ধের মতো এগিয়ে গিয়ে খাটের পাশে দাঁড়াল।

অধ্যায় ১২: প্রথম রাত্রি - পর্ব ২  উন্মোচন)

রিয়া খাটের পাশে পাথরের মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে। তার মাথা নিচু, চোখ মেঝের দিকে। তার বুকের ভেতরটা তোলপাড় করছে। মহেন্দ্রবাবু খাট থেকে নামলেন। তিনি রিয়ার সামনে এসে দাঁড়ালেন। তার দীর্ঘ, বলিষ্ঠ চেহারার সামনে রিয়াকে আরও ছোট, আরও কোমল দেখাচ্ছিল। "ভয় পেও না বৌমা," তিনি শান্ত গলায় বললেন। তার হাতটা বাড়িয়ে রিয়ার চিবুকটা আলতো করে ধরে তুলে ধরলেন। রিয়ার ভেজা, কাঁপা চোখের দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন, "চোখ খোলো। আমার দিকে তাকাও।"

রিয়া ধীরে ধীরে চোখ খুলল। তার শ্বশুরের চোখে সে দেখল এক অদ্ভুত স্নিগ্ধতা, এক গভীর আশ্বাস। "এটাকে পাপ ভেবো না। এটাকে আমাদের পরিবারের জন্য তোমার ত্যাগ হিসাবে দেখো। আর আমি তোমার এই ত্যাগের মর্যাদা রাখব।" তার কথাগুলো রিয়ার মনে এক অদ্ভুত শান্তির প্রলেপ দিল। তার ভয়টা যেন কিছুটা কমে এল।

মহেন্দ্রবাবু তার হাতটা বাড়িয়ে রিয়ার শাড়ির আঁচলটা ধরলেন। অত্যন্ত ধীর, সংযত ভঙ্গিতে তিনি আঁচলটা তার কাঁধ থেকে নামিয়ে দিলেন। রিয়ার হৃদস্পন্দন দ্রুত থেকে দ্রুততর হতে লাগল। তিনি রিয়ার দিকে এক পা এগিয়ে এসে তার ব্লাউজের পেছনের হুকগুলোর দিকে হাত বাড়ালেন। তার অভিজ্ঞ, স্থির আঙুলের স্পর্শ রিয়ার পিঠে লাগতেই তার সারা শরীরে যেন বিদ্যুতের স্রোত বয়ে গেল।

একটা একটা করে হুক খুলতে লাগলেন তিনি। প্রতিটি হুকের খোলার শব্দের সাথে সাথে রিয়ার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল। ব্লাউজটা আলগা হয়ে তার কাঁধ থেকে খসে পড়ল। নীল নাইট ল্যাম্পের আলোয় রিয়ার ফর্সা পিঠ, তার মসৃণ ত্বক, তার সুগঠিত বাহু—সবকিছুই যেন এক জীবন্ত ভাস্কর্যের মতো ফুটে উঠল।

এরপর তিনি রিয়ার শাড়ির কুঁচিটা ধরে আলতো করে টান দিলেন। নীল সিল্কের শাড়িটা নিঃশব্দে রিয়ার পা বেয়ে মেঝের ওপর লুটিয়ে পড়ল। রিয়া এখন শুধু একটা সায়া আর ব্রা পরে দাঁড়িয়ে। তার বুকটা জোরে জোরে ওঠানামা করছে।

মহেন্দ্রবাবু এক মুহূর্তের জন্য রিয়ার দিকে তাকিয়ে রইলেন। তার চোখে ছিল এক শিল্পীর দৃষ্টি, যে তার সৃষ্টির নিখুঁত সৌন্দর্যকে উপভোগ করছে। তিনি ঝুঁকে পড়ে রিয়ার কানে ফিসফিস করে বললেন, "তুমি খুব সুন্দর, রিয়া। অবিশ্বাস্য রকমের সুন্দর।" এই প্রথম তার শ্বশুর তাকে নাম ধরে ডাকলেন। 'বৌমা' সম্বোধনের পরিবর্তে 'রিয়া' ডাকটা এই মুহূর্তে, এই পরিস্থিতিতে কেমন যেন এক নতুন intimacyর জন্ম দিল।

তিনি রিয়ার হাতটা ধরে তাকে খাটের ওপর বসালেন। তারপর নিজে তার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে তার পায়ের সায়াটা ধীরে ধীরে ওপরের দিকে তুলতে লাগলেন। রিয়ার ফর্সা, মসৃণ পা, তার সুগঠিত উরু—মহেন্দ্রবাবুর চোখের সামনে উন্মোচিত হতে লাগল। তিনি সায়াটা কোমর পর্যন্ত তুলে, তার ভেতরের অন্তর্বাসটাও সায়ার সাথে ধরে শরীর থেকে আলাদা করে দিলেন।

রিয়া এখন তার শ্বশুরের সামনে সম্পূর্ণ নগ্ন। লজ্জায় তার মুখটা বুকের মধ্যে গুঁজে দেওয়ার ইচ্ছে করছিল। কিন্তু সে পারল না। সে শুধু চোখ বন্ধ করে রইল।

মহেন্দ্রবাবু উঠে দাঁড়ালেন। তিনি তার নিজের লুঙ্গিটাও খুলে ফেললেন। আবছা নীল আলোয় রিয়া চোখ মেলে তাকাল। আর যা দেখল, তাতে তার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হলো। সে যা কল্পনা করেছিল, বাস্তব তার থেকে অনেক বেশি বিস্ময়কর। মহেন্দ্রবাবুর পুরুষাঙ্গ...

Post a Comment

0 Comments